আজ শনিবার, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩শে নভেম্বর ২০২৪

ফেরদৌসী ইসলাম নিঃস্বার্থ, নিরহংকারী ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়ানো এক নারীর কথা

মেহেদি হাসান

আজ থেকে প্রায় দুই বছর আগে ফেরদৌসী ইসলাম আদিবাসী অধ্যুষিত বাসুগ্রাম (কার্তিকপুর) সাঁওতালদের এক অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখেন সেখানকার ছেলে-মেয়েরা প্রায় সবাই নিরক্ষর এবং বয়স্করা প্রায় সবাই অশিক্ষিত। বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানতে পারেন এখানে সাত মাইলের মধ্যে কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নাই। ফলে সাত মাইল দূরে গিয়ে লেখা-পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে ছেলে-মেয়েরা। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন এখানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়  স্থাপন করবেন। বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য জমিও ক্রয় করলেন। ভবন নির্মাণ এর জন্য বিভিন্ন মন্ত্রী-সচিবদের সাথে কথা বলে তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে লাগলেন। বিভিন্নজন আশ্বাস দেন কিন্তু বাস্তবে কাজ হয় না। সিদ্ধান্ত নিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে সমস্ত তথ্য দিবেন।

সেই লক্ষ্যে নাচোল উপজেলার শিক্ষা কমিটির প্রতিবেদন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মতামত, উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মতামত ও জমি সংক্রান্ত কাগজাদি সংগ্রহ করলেন। সমস্ত তথ্যাদি নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কথা-বার্তা শুনে অবাক হলেন এবং সমস্ত তথ্যাদি তিনি জমা রাখলেন। মাত্র তিন দিনের মাথায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর হতে কাক্সিক্ষত চিঠি পেলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সদয় সম্মতি দিয়েছেন সেখানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন হবে মর্মে। এই পত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট সচিবের কাছে গেলেন। তিনি বললেন গেজেট করতে হবে। এই গেজেট এর জন্য দৌড়াতে লাগলেন। সেখানে আরও কিছু কাগজপত্র সংগ্রহ করে সচিবকে দিলেন। সচিব বললেন গেজেট হলেই ভবন নির্মাণসহ শিক্ষা কার্যক্রম চালু হবে। 

অবশষেে গত ২২ মে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়ছেে বদ্যিালয়টি স্থানীয় বরণ্যে ব্যক্তত্বি ইলামত্রিরে নাম অনুসারে ইলামত্রি সরকারি প্রাথমকি বদ্যিালয় স্থাপনরে সিধান্ত গ্রহণ করা হয়ছে।ে এখন শুধু ভবন নর্মিাণ ও শক্ষিার র্কাযক্রম শুরুর অপক্ষো। এছাড়াও তিনি বহু দুঃস্থ, অসহায় ও দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল হতে আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা ধারাবাহিকভাবে প্রদান করে আসছেন। 


ফেরদৌসী ইসলাম, ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ডা: আ.আ.ম. মেসবাহুল হক (বাচ্চু ডাক্তার) ও মাতার নাম মাসুদা হক। তার স্বামীর নাম ডঃ মোঃ সাইফুল ইসলাম। ফেরদৌসী ইসলাম নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ হতে ১৯৮৬ সালে ডিগ্রী পাস করেন। তিনি ছাত্র জীবনে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের  ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। 


ফেরদৌসী ইসলাম ২০  ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সালে একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য মনোনীত হন। একাদশ জাতীয় সংসদে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ও  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও দলিত ও সমতলের  ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্পর্কিত সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপ (এপিপিজি)  সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 


তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহিলা আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী কমিটির  সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ডায়াবেটিক সমিতি ও জেলা রেডক্রিসেন্ট সমিতির আজীবন সদস্য। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যক্ষা নিরোধ  সমিতির সাথে যক্ষা নিরোধ বিষয়ক কার্যক্রমের সাথে জড়িত। এছাড়াও  চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা কমিটির  উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়া তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার “বঙ্গবন্ধু পরিষদ”-এর আজীবন সদস্য। 


তিনি দলিত ও সমতলের  ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্পর্কিত  কার্যক্রম স্ব-চক্ষে দেখার জন্য নেপাল ও ভারত ভ্রমণ করেন।  তিনি পবিত্র হজ্ব ব্রত পালনের  জন্য সৌদি আরব  ভ্রমণ করেন।  ফেরদৌসী ইসলাম  এক ছেলে ও এক মেয়ের জননী। বই পড়া, বাগান করা  ও দুঃস্থ অসহায় লোকদের সহায়তা করা তাঁর শখ। 


লেখক ঃ নিজামুল হোদা,বালিয়াডাঙ্গা ।


মন্তব্য সমুহ
০ টি মন্তব্য
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন
এই শ্রেনির আরো সংবাদ

ফিচার নিউজ