আজ শনিবার, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪

মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান বুলির বিরুদ্ধে ৯ ইউপি সদস্যের অনাস্থা আবেদন

মেহেদি হাসান

নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে অনাস্থা দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের ৯ জন সদস্য।

গত ৫ জুলাই রোববার ৯ জন মেম্বার স্বাক্ষরিত একটি আবেদন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর জমা দেয়া হয়েছে। আবেদনের কপি দেয়া হয়েছে ডিডি এলজি, সদর উপজেলা চেয়ারমান ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে। আবেদনে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ এজাবুল হক বুলি এর দুর্নীতি ও আত্মসাতের কারণে ইউনিয়ন পরিষদের জনগণ সুবিধাবঞ্চিত এবং এলাকা উন্নয়ন বঞ্চিত। ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্যগণ অধিকার বঞ্চিত।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান একক সিদ্ধান্তে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে শালিসের মাধ্যমে জরিমাণাকৃত ৯টি বড় শালিসের প্রায় ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকা প্রকৃত প্রাপককে না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া দক্ষতা, কর্মদক্ষতা ও ননওেয়েজ কাজের ৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের ৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকা চেয়ারম্যান কাজ না করেই উত্তোলন করেছেন। কাবিখার ৩টি প্রকল্পের সাড়ে ৮ মেট্রিক টন চাল, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের ৪০ মেট্রিক টন চাল একাই আত্মসাৎ করেছেন চেয়ারম্যান। ৩৮টি পয়েন্টে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে হোল্ডিং ট্যাক্সের ৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ, শতকরা ১ ভাগ টাকার উন্নয়ন কাজ বিশ্বরোড থেকে চেয়ারম্যানের বাড়ির সংযোগ রাস্তা নির্মাণ বাবদ ২ বারে মোট ৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা কাজ না করেই আত্মসাৎ, মেলার মোড় মসজিদ এর উন্নয়নে দেয়া টিআর এর ৭৫ হাজার টাকা না দেয়া, মরহুম আফজাল হোসেন মেম্বারের এলজিএসপির ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ, সেমাজুল মেম্বারের কাছ থেকে ইউনিয়নের বিভিন্ন কাজের অজুহাতে নেয়া ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ফিরিয়ে না দেয়া, পানির পাইপ লাইনের আবেদন বাবদ গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া প্রায় ২ লাখ টাকা আত্মসাৎ, সরকারী টিউবওয়েল বরাদ্দের নামে জনগণের কাছ থেকে নেয়া ৬৫ হাজার টাকা।

এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ হিসাব থেকে কর আদায়ের জমাকৃত টাকা ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন, ভিক্ষুকদের মাঝে গরু-ছাগল বিতরণ না করে সে টাকা আত্মসাৎ, ভিজিডি সুবিধাভোগীদের জমাকৃত টাকা আত্মসাৎ, মেম্বারদের বাদ দিয়ে দালালদের মাধ্যমে অনুদান কার্ড বা উপকরণ বিতরণ, নির্বাচনের মাধ্যমে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ নির্বাচিত হওয়ার পরও রেজুলেশন করে দায়িত্ব না দেয়া ইত্যাদি অভিযোগ দিয়ে এ অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন মেম্বাররা।

এ ব্যাপারে মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলির যোগাযোগ করা হলে তিনি উল্টো অভিযোগ করে বলেন, এটা একেবারে ভিত্তিহীন, একটারও কোন ভিত্তি নাই। আমি চাল উঠিয়ে নিয়ে আসলে তারা আমার কাছে আপন আপন ভাগ চাইলে আমি নিয়ম অনুযায়ী দিতে চাইলে তারা ৫ জন সদস্য মদ খেলে পরিষদ এসে প্রকাশ্যে এসে গালিগালাজ করে। এছাড়া একজন সদস্য নিয়মিত অফিস করেনা সে ভারতে থাকে আর একজন সেমাজুল সে দীর্ঘদিন থেকে অফিস মানে পরিষদে আসেনা। অন্যান্য কাজে অভিযোগে তিনি বলেন, আমি তো এগুলো কোন কাজেরই সভাপতি নই, ছিলামও না। আমি এক ছটাক কোন কাজের সভাপতি হইনি। তাদের উদ্দেশ্য হলো তারা টাকা নিয়ে শালিস করবে, টাকা নিয়ে বিচার করবে । আমিও তাদের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দিয়েছি। ডিসি বরাবর অভিযোগ দিয়েছি, কপি দিয়েছি ডিডিএলজি, ইউএনওকেও।

মন্তব্য সমুহ
০ টি মন্তব্য
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন
এই শ্রেনির আরো সংবাদ

ফিচার নিউজ