আজ রবিবার, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪শে নভেম্বর ২০২৪

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে ১০টাকা কেজির চাল যাচ্ছে বিত্তশালীদের ঘরে

  • ১৭ই মে ২০২০ রাত ০২:১৮:০৩
  • নাচোল

News Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত ৩বছর ধরে এই অনিয়ম চলে আসছে বলে জানাগেছে। এই চাল হতদরিদ্রদের মধ্যে বিতরণের কথা থাকলেও উপজেলার চারটি ইউনিয়নে বিত্তশালী ও একই পরিবারের একাধিক সদস্যের নামে এই চাল দেয়া হয়েছে। তালিকা যাচাই করে দেখা গেছে, এরকম সংখ্যা প্রায় সহস্রাধিক। এমনকি অন্য উপজেলার জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর নামেও এই নাচোল উপজেলা থেকে খাদ্য বান্ধব প্রকল্পের ১০ টাকা কেজির চাল উত্তোলন করা হয়েছে। আর এসব অনিয়মে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বারসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই জড়ীত রয়েছেন। সম্প্রতি এর তালিকা যাচাই করতে গিয়ে এ অনিয়ম উঠে আসে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল হতদরিদ্রদের মধ্যে বিতরণের জন্য তালিকা করা হয়। নাচোল উপজেলার চার ইউনিয়নে মোট ৫০৫৮ জনের নামে তালিকা করা হয়। প্রতিটি ইউনিয়নেই কমবেশি এ অনিয়ম ধরা পড়েছে ।

সহস্রাধিক প্রভাবশালী বিত্তবান, ভুয়া নাম দিয়ে কার্ড, একই পরিবারে স্বামী-স্ত্রীর নামে ও একই ব্যাক্তির নামে ২টি কার্ডসহ বিভিন্ন ভাতা ভোগী এবং উপজেলার বাইরে নিয়ামতপুর, তানোর, গোমস্তাপুর ও শিবগঞ্জ উপজেলার ব্যাক্তিরা তাদের আইডি নম্বর ব্যবহার করে ১০টাকা কেজির চাল খাচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়েনে সরোজমিনে গেলে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। জনপ্রতিনিধিরা ভুয়া ব্যাক্তির নামে কার্ড তৈরী করে ডিলারের সাথে আঁতাত করে ১০ টাকা কেজি দরের চাল আত্মসাৎ করছেন। আর হতদরিদ্রদের তালিকায় নাম না দিয়ে বিত্তবানদের তালিকায় নাম দিয়ে ১০ টাকা কেজি দরের চাল যাচ্ছে বিত্তবানদের ঘরে।

সরকারের নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের দেয়া তালিকায় বিগত ৩ বছর ধরে বিত্তশালীরা ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল খাচ্ছেন। প্রধান মন্ত্রী ঘোষিত ১০ টাকা কেজি দরের চাল শুধু মাত্র হতদরিদ্রদের মাঝে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও জন প্রতিনিধিরা সে নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে সরকার দলীয় নেতা কর্মী ও বিত্তবানদের তালিকা প্রনয়ন করেছেন। ফলে সরকারের ঘোষিত কর্মসুচী ভেস্তে যেতে বসেছে, অপর দিকে হতদরিদ্ররা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নে ৮নং ওয়ার্ডে সরোজমিনে গেলে বেরিয়ে আসে এসব অনিয়মের চিত্র। 

একটি নির্ভর যোগ্যসুত্রে জানাগেছে,নেজামপুর ইউপি’র বড় বাকইল গ্রামে দুর্গা বর্মন ও শ্যামল বর্মন (স্বামী ও স্ত্রীর) নামে রয়েছে হতদরিদ্রদের কার্ড, তানোর উপজেলার কৈইল গ্রামের রুনা লায়লা খাতুন স্বামী রবিউল ইসলাম (আইডি নং ৮১১৯৪৭০০০০০০১) এর নামে রয়েছে ১টি কার্ড। নিয়ামতপুর উপজেলায় তাইজুদ্দিন পিতা- তপের আলীর (আইডি নং ৬৪১৬৯৬৩৬৬৬০১৬৩) ভেলকীপুর গ্রামের রহিমা খাতুন স্বামী আজিজুল (আইডি নং ৬৪১৬৯৬৩৩৩২২০৩) শিবগঞ্জ উপজেলায় গুপ্ত মানিক গ্রামের আমিনুল ইসলাম পিতা সলেমান(আইডি নং ৭০১৮৮২৩০২৬৩৫২) বসবাসরত ব্যাক্তিদের নামেও রয়েছে তালিকা। 

বিষয়টি নিয়ে ৪নং নেজামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অনিয়মের ব্যাপারে তেমন কোন সদুত্তর দিতে পানেনি। এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আজহারুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন হতদরিদ্র ব্যাতীত যেসব কার্ড ধারী রয়েছেন তাদের নাম শ্রীঘ্রয় বাতিল করা হবে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাজ থেকে একটি চিঠি ইস্যু হয়েছে শ্রিঘই তালিকা পরিবর্তন হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানা সাথে যোগাযোগ কনা হলে তিনি বলেন, হতদরিদ্র ছাড়া কাউকে এ সুবিধা ভোগ তরতে দেয়া হবেনা বলে সাফ জানিয়েদেন তিনি। শিঘ্রই এ বিষয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডের র্ট্যাগ অফিসারসহ ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে যা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

মন্তব্য সমুহ
০ টি মন্তব্য
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন
এই শ্রেনির আরো সংবাদ

ফিচার নিউজ