আজ শনিবার, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩শে নভেম্বর ২০২৪

চাঁপাইনবাবগঞ্জের চামড়া ব্যবসায়ীদের জন্য যা করা দরকার তাই করা হবে : জেলা প্রশাসক

মেহেদি হাসান

নিজস্ব প্রতিবেদক : পশু কোরবানি, দ্রুত বর্জ্য অপসারণ ও চামড়া ব্যবস্থাপনা বিষয়ে জুম অ্যাপসের মাধ্যমে ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১০টা থেকে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় স্ব স্ব কর্মস্থল থেকে অংশগ্রহণ করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা ও চামড়া ব্যবসায়ীরা।

সভায় আলোচনায় কোরবানি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পশুর হাটগুলোতে আগত লোকজনের মাস্ক পরা নিশ্চিত করা, অনলাইন পশুহাটকে উৎসাহিত করা এবং পশুহাটে একদিক দিয়ে প্রবেশ করে অন্যদিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। পৌর মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের এই বিষয়টি দেখভাল করার জন্য অনুরোধ করা হয়।

সভায় জানানো হয় বড় বড় পশুহাটগুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচলনা করা হবে। নির্ধারিত স্থানে কোরবানির পশু জবাই করে এবং দ্রুত সমযের মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করার জন্য বলা হয়। প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মনিটরিং টিমকে পশুহাটে থাকার সুপারিশ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে অনুরোধ করা হয়।

হাটের প্রবেশমুখে সাবান, পানি ও হ্যান্ড সানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মানতে চলতেও অনুরোধ করা হয়। এর ব্যাত্যয় ঘটলে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার পাশাপাশি প্রয়োজনে হাট বন্ধ করে দেয়া হবে বলেও জানানো হয়। সরাসরি হাটে না গিয়ে জেলা প্রশাসনের অনলাইন পশুহাটের মাধ্যমে গরু ছাগল কিনে কোরবানি করতে উৎসাহিত করার জন্য সকলকে উদ্যোগী হতে অনুরোধ জানানো হয় ।

জেলা প্রশাসক এ জেড এম নূরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভাটি পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক একেএম তাজকির-উজ-জামান। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জেলায় বাড়ি বাড়ি ও খামারিদের মাধ্যমে গরু, ছাগলসহ অন্যান্য প্রাণী উৎপাদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান। পৌরসভার গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এরআর আজরি কারিবুল হক রাজিন। সদর উপজেলা পরিষদের এ-সংক্রান্ত কার্যক্রম তুলে ধরেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তসিকুল ইসলাম তসি। ইউএনওদের মধ্যে ভোলাহাট উপজেলার কার্যক্রম তুলে ধরেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিবুল আলম। ঈদের নামাজ আদায় বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সিদ্ধান্ত সভাকে অবহিত করেন জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক আবুল কালাম।

তিনি জানান, ঈদুল আজহার নামাজও স্বাস্থ্য বিধি মেনে মসজিদে মসজিদে আদায় করতে হবে চামড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে মঞ্জুর আলী ও শহীদুল ইসলাম তাদের সম্যসার কথা তুলে ধরে বলেন- এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে চামড়ার কোনো মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি এবং তাদের বকেয়া এখনো তারা পাননি। বর্তমানে তাদের কাছে লবণ কেনার টাকাও নেই। এর জবাবে জেলা প্রশাসক সুনির্দিষ্ট করে প্রস্তাব দিতে বলেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চামড়া বিক্রির বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানান। চামড়া ব্যবসায়ীদের জন্য যা যা করণীয় তা করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চামড়া সীমান্তমুখী হবে না, হবে রাজশাহী, নাটোর ও ঢাকামুখী। সীমান্তমুখী হলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলা প্রশাসক এ জেড এম নূরুল হক বলেন- গত মার্চ মাস থেকে আমরা খুবই স্পর্শকাতর সময় আমরা পার করছি। দিন দিন অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে।

আজ (গতকাল) পর্যন্ত করোনা পজিটিভ হয়েছে ২৮৪ জন এবং এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৯৭ জন। বর্তমানে অবস্থা খারাপ। সদর হাসপাতালে বেশ কয়েকজন রোগী আছে, যাদেরকে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমাদের হাতে অক্সিজেন ছিল না। রাত ১২টা পর্যন্ত সভা করে জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন সংগ্রহ করে রোগীদের বাঁচানো হয়েছে। অবস্থা আরো খারাপ হলে অক্সিজেনের ঘাটতি পড়বে। তাই লিকুইড অক্সিজেনের চেষ্টা চলছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন-সকলে সম্মিলিতভাবে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করলে উত্তরণ করা যাবে না। তাই আসুন, আমরা সকলের প্রচেষ্টায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার রোধে কাজ করি।

মন্তব্য সমুহ
০ টি মন্তব্য
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন
এই শ্রেনির আরো সংবাদ

ফিচার নিউজ