আজ বৃহঃস্পতিবার, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪

ড. মাযহারুল ইসলাম তরু আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে যোগদান

মেহেদি হাসান

ঐতিহ্যবাহী আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত ) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন প্রফেসর ডঃ মাযহারুল ইসলাম তরু।  রোববার (৫ ডিসেম্বর) সকালে তিনি কলেজে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও ইংরেজি বিভাগের প্রধান ইমানুল হকের কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন । 

দায়িত্ব গ্রহণকালে  উপস্থিত ছিলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল এমপি, নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শংকর কুমার কুণ্ডু, রংপুর ক্যাডেট কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইসরাইল হক, মৌলভী ইদ্রিশ আহমদ মিয়ার পৌত্র ইত্তেহাদ তৌহিদুল উদ্রিশী কলিন্স, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা শফিকুল আলম, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোঃ শাহ আলম,আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানসহ শিক্ষকগণ, নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, দাদনচক মডেল পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ নজরুল ইসলাম (সি স্যার), উদ্রিশ আহমদ মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ (অবৈতনিক) জামালুল ইসলাম জামাল প্রমুখ।

এর আগে প্রফেসর ড. মাযহারুল ইসলাম তরু ২০০৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগদানপূর্বক বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েও তিনি এই কলেজেই বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দীর্ঘ ১৬ বছর সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। 

 ড. মাযহারুল ইসলাম তরুর জন্ম ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৮, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে। তাঁর পিতার নাম অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, মাতা তাহেরা ইসলাম। তিনি ১৯৮৪ সালে নবাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ১৯৮৬ সালে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৩ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ¯œাতক সম্মান ও ১৯৯৪ সালে ¯œাতকোত্তর, ১৯৯৯ সালে এম.ফিল এবং ২০০২ সালে পি-এইচ.ডি ডিগ্রী লাভ করেন।

১৯৯৫ সালে কলেজ শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবনে প্রবেশ। বর্তমানে তিনি নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে বাংলা বিভাগের প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত। শিক্ষকতায় অবদানের জন্য তিনি ২০০৪ সালের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে জাতীয় পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক স্বর্ণপদক লাভ করেন। ২০০৭ সালে তিনি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাংস্কৃতিক সমীক্ষা কার্যক্রমে রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমির ‘লোকজ সংস্কৃতির বিকাশ’ কর্মসূচিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলা পিডিয়ায় লেখক হিসেবে বেশকিছু ভুক্তি রচনা করেন।

সাহিত্যচর্চায় অবদানের জন্য তিনি পাবলিক লাইব্রেরি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৯), বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সাহিত্য পুরস্কার (২০০০), রমেন ঘোষ স্মৃতি সম্মান (২০০২), কবি মকবুল হোসেন স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার (২০০২), জাতীয় সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার (২০০৬) ন্যাশনাল সার্টিফিকেট, বাংলাদেশ স্কাউটস (২০০৭), গাংচিল সাহিত্য পদক (২০০৮), জাতীয় সাহিত্য পরিষদ পদক (২০০৯), জাতীয় কবি নজরুল সম্মাননা (২০১০) সহ ২২টি পুরস্কার লাভ করেন।

তাঁর বাংলা একাডেমি থেকে ৬টি গ্রন্থসহ ইতোমধ্যে মোট ২৮টি গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলির মধ্যে নবাবগঞ্জ জেলার ইতিকথা (১৯৯০), চাঁপাইনবাবগঞ্জ: ইতিহাস ও ঐতিহ্য (১৯৯৫), চাঁপাইনবাবগঞ্জের লোকসংস্কৃতি পরিচিতি (১৯৯৯), প্রমিত বাংলা ব্যাকরণ ও রচনা (১৯৯৯), বরেন্দ্র অঞ্চলের লোকসংগীত: আলকাপ (২০০৩), আদিবাসী লোকজীবন (২০০৭), গৌড় থেকে চাঁপাই (২০০৭), বাংলাদেশের আদিবাসী সংস্কৃতি (২০০৮), আদিবাসী লোকসাহিত্য (২০০৮), গারো সম্প্রদায়: সমাজ ও সংস্কৃতি (২০০৮), হাজার বছরের গম্ভীরা (২০০৮) এবং কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রসঙ্গ লোককথা (২০০৮) উল্লেখযোগ্য।

তিনি বাংলা একাডেমী, এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ফোকলোর সোসাইটি, বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতি, নজরুল পরিষদ, ফোকলোর গবেষণা সংসদ, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, জাতীয় সাহিত্য পরিষদ, উত্তর বাংলা সংস্কৃতি পরিষদসহ ১৫টি প্রতিষ্ঠানের জীবন সদস্য।

তিনি জাতীয় প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ বেতারের গীতিকার। দীর্ঘ দুই যুগ ধরে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে লোকজ সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি যে গবেষণা করেছেন ইতোমধ্যে তার সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর বিভিন্ন গ্রন্থ বর্তমানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে রেফারেন্স গ্রন্থ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

মন্তব্য সমুহ
০ টি মন্তব্য
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন
এই শ্রেনির আরো সংবাদ

ফিচার নিউজ