
মেহেদি হাসান
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক এরফান গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মরহুম এরফান আলীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ সোমবার। ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টা ২০ মিনিটে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন স্বনামধন্য এই ব্যবসায়ী।
সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে উঠা আসা দেশের ব্যবসা অর্থনীতির অন্যতম অংশীজন এরফান আলী। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের নামোশংকরবাটী বারোরশিয়া এলাকায় ১৯৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৩ সালে হাসকিং মিলে চাল উৎপাদনের মাধ্যমে সফল এই উদ্যোক্তার পথচলা শুরু হয়। ২০০১ সালে অটোমেটিক রাইস মিল নির্মাণের পরে মাত্র দুই যুগের ব্যবধানে গড়ে তোলেন একটি প্রতিষ্ঠিত গ্রুপ অব কোম্পানিজ। এরই মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হয় এরফান গ্রুপের। সেই উদ্যোগ সফল হলে দিন দিন এরফান গ্রুপের অগ্রযাত্রা আরও বেশি বিস্তৃত হতে থাকে। উৎপাদন, শিল্প উদ্যোগ আর বাণিজ্যে বাড়তে থাকে বিনিয়োগ। বর্তমানে এরফান গ্রুপের অধীনে উৎপাদন, সেবা ও বাণিজ্য খাতের বিভিন্ন পর্যায়ে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের উন্নত সেবা দিয়ে আসছে। এ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৭ হাজার লোকের কর্মসংস্থার সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করে চলেছে এ শিল্প গ্রুপটি। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এরফান গ্রুপের চাল যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেনসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে।
পাঁচ দশকে এরফান আলী গ্রুপের ব্যবসা প্রসারিত করে নিয়ে গেছেন অন্য এক উচ্চতায়, দেশীয় খাদ্য শিল্পকে নিয়ে গেছেন গতানুগতিক ব্যবসা গণ্ডির বাইরে। কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন ও অটো রাইস মিল ব্যবসার মাধ্যমে অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি রফতানি, আতিথেয়তা, ফিশারিজ, ফিলিং স্টেশন ও পরিবহন ব্যবসায় অভিযাত্রা শুরু করেছে এ গ্রুপটি। খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও পরিবেশসেবায় তাদের দায়িত্ববোধের কারণে ২০১৪ সালে কমিটমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ফর এগ্রো কমার্স লাভ করে গ্রুপটি। ওই একই বছরে স্বাধীনতা সংসদ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। এছাড়াও অসংখ্য বার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সবোর্চ্চ করদাতা নির্বাচিত হন।
২০১৩ সালে ব্যাংক বিমা শিল্প বিজনেস অ্যাওয়ার্ড পদক অর্জন করে গ্রুপটি। এরফান আলী চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ছিলেন।
শুধু ব্যবসা নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়েও সচেতন ছিলেন শিল্পপতি এরফান আলী। দুর্যোগ-দুর্বিপাকে মানুষকে অর্থসহায়তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয়প্রতিষ্ঠান ও এলাকার অবকাঠামো নির্মাণসহ নানাভাবে মানুষকে সহযোগিতা
করেছেন।