মেহেদি হাসান
ওদের কারো মা কারো বাবা নেই। তাই মা বাবার মত আদর- স্নেহ মেলে না। সরকারি শিশু পরিবারে বেড়ে উঠছে। তাই সমাজের আর দশটা শিশুর থেকে আলাদা ওদের জীবন। কিন্তু সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন, জেলা প্রশাসকের সহধর্মিনী ও লেডিস ক্লাবের সভাপতি মাহফুজা সুলতানার কাছ থেকে বাবা মায়ের মমতা পেয়ে যেন অন্যরকম একটি দিন কাটিয়েছে এতিম শিশুরা।
বাবা মায়ের মমতায় নিজ হাতে ওদের পাতে খাবার তুলে দিলেন জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন, জেলা প্রশাসকের সহধর্মিনী মাহফুজা সুলতানা। এতে মা বাবা না থাকার দুঃখ কিছু সময়ের জন্য হলেও ভুলে যায় এতিম শিশুরা।
জন্মদিনে,ভাল খাবার পরিবেশন সেই সাথে জেলা প্রশাসক নিজেই এতিম শিশুদের জন্য ৩২ কেজি ওজনের বাঘাইড় মাছ, মিষ্টি,দইসহ নানা ধরনের খাবার নিয়ে যান। ৩২ কেজির বাঘাইড় মাছ পেয়ে সরকারি শিশু পরিবারের শিশু আনন্দে আত্নহারা হয়ে যান। মাছটিকে ঘিরে শিশু পরিবারের সবাই একবারের জন্য হলেও সেটি ছুয়ে দেখে। এছাড়াও সরকারি শিশু পরিবারের ৫ মেধাবী শিক্ষার্থীকে ৭৮ হাজার টাকার মেধা বৃত্তি প্রদান করেন জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন ও লেডিস ক্লাবের সভাপতি মাহফুজা সুলতানা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে সরকারি শিশু পরিবার। এ পরিবারে স্বজনবিহীন প্রায় ৬০-৭০জন শিশু বেড়ে উঠছে। পড়ালেখার পাশাপাশ খেলাধূলার সুযোগও পাচ্ছে তারা। তারপরও মা বাবা আর স্বজন না থাকার বেদনা ওদের সব সময় ঘিরে রাখে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে শিশু পরিবারের এসব অনাথ শিশুদের মাঝে ভালো খাবর বিতরণ করা হয়। জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন ও তার সহধর্মিনী মাহফুজা সুলতানা অনাথ শিশুদের মায়ের মমতায় নিয়ে নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করেন। থালে থালে বেড়ে দেন পোলাও, মাংস। নেন তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর।
এতিম শিশুদের মাঝে জেলা প্রশাসকের খাবার পরিবেশনের সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উপসচিব দেবেন্দ্রনাথ উরাঁও, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহবুব উল ইসলাম, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে কুলসুম, নেজারত ডেপুটি ক্যালেকটর (এনডিসি) মোঃ তৌফিক আজিজ,সহকারী কমিশনার তানজিনা শারমিন দৃষ্টি, সরকারি শিশু পরিবারের উপ-তত্বাবধায়ক শাহনাজ পারভীন ।
জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন তার অনুভ’তি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, সরকার এসব শিশুর জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করেছে। তাদের খাবারের সময় গিয়েছিলাম। এই শিশুদের একটু খোঁজ খবর নিয়েছি। তিনি আরো বলেন, এটা শুধু সরকার বা জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব নয়। সবাই যেন এগিয়ে আসে। বিত্তবানরা যদি তাদের সন্তানদের জন্মদিন এসব বাচ্চাদের নিয়ে পালন করে, তাতে ওদের অনেক ভালো লাগে।
লেডিস ক্লাবের সভাপতি ও জেলা প্রশাসকের সহধমিনী মাহফুজা সুলতানা জানান, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনকের জন্মদিন আজ তিনি হয়তো আজ আমাদের মাঝে নেই কিন্তু তিনি রয়েছেন আমাদের হৃদয়ে। তার কাছে সবসময় শিশুরা খুব প্রিয় ছিল। ১৯৯৭ সালে এ জাতীয় শিশু দিবস প্রথম শুরু হয়েছিল।আমি আশা করবো তোমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আদর্শিত হয়ে নিজেকে গড়ে তুলবে। তোমরা যারা আজকে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মেধা বৃত্তি পেলে তোমার অভিনন্দন সেই তোমরা যারা এখানে আছো আগামীতে যেন তোমরা এ মেধা বৃত্তি পাও।