শিবগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা লাঞ্চিত ঘটনায় উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন। চলছে পাল্টা পাল্টি সংবাদ সম্মেলন

মেহেদি হাসান

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধার লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গন। চলছে পাল্টা পাল্টি সংবাদ সম্মেলন এবং ফেসবুকে একে অপরের বিরুদ্ধে বিষেদাগার। জানা গেছে শিবগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমাণ্ডার বজলুর রশিদ সনুকে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনায় সাবেক কমাণ্ডার বজলার রশিদ সনু তার বক্তব্যে নির্বাচন সংক্রান্ত বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টুটুল খাঁন তার মাইক কেড়ে নেয় এবং গালিগালাজ করে।

ফলশ্রæতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং শিবগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রতিবাদে মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টুটুল খাঁনের দলীয় পদ থেকে বহিস্কার দাবি করে।

পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে বীরমুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদ সনুকে মাদকাসক্ত,মাতাল দলীয় বিশৃঙ্খলার অভিযোগ তুলেন।

 বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাধারণ পাঠাগারে আবারো সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদ সনু  শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টুটুল খাঁন কর্তৃক লাঞ্চিত হওয়ার প্রতিবাদে শাস্তি দাবি করে , উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত বহিস্কার দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার নেত্রী আমি কখনোই তাকে নিয়ে কুটুক্তি বা বাজে কোন কথা বলতে পারিনা। কারণ আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। এছাড়া তিনি কুখ্যাত রাজাকারকে উপজেলা আওয়ামী লীগের পদ দিয়েছেন।

ব্যাপারে আতিকুল ইসলাম টুটুল খাঁন বলেন, বজলুর রশিদ সনু বহুমাত্রিক মানুষ। তিনি অধিক সময় মাদকাসক্ত  থাকেন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে তিনি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী দলীয় নির্বাচন নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় তার বক্তব্য বন্ধ করা হয়েছে। 

বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদ সনুকে শত শত মানুষের সামনে কিভাবে লাঞ্চিত করে। বিষয়ে তিনি তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি করেন।

 জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক  ডা. সামিল উদ্দিন শিমুল বলেন,বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদ সনু তার বক্তব্যে চলমান নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললে তার মাইক কেঁড়ে নেয় আমি সময় সনু ভাইয়ের কাছে সকলের পক্ষ থেকে হাতজোড় করে মাফ চায়।

জেলা আওয়ামী সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, কারো বক্তব্য পছন্দ না হলে মাইক কেড়ে নেয়াটা ঠিক হয়নি। এটা অন্য ভাবে প্রতিবাদ করা যেত।

বজলুর রশিদ সনুর কন্যা শারমিন আক্তার সুমি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে আমার পিতা শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন যেন, দুলর্ভপুর ইউনিয়নে আগামীতে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন যেন অবাধ,সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয়। সেসময় তার পিতাকে আতিকুল ইসলাম  টুটুল খাঁন লাঞ্চিত করে।


কপিরাইট © চাঁপাই নিউজ ডট কম ২০২৪ । সর্বসত্ব সংরক্ষিত।