চাঁপাইনবাবগঞ্জে শুরু হল সপ্তাহব্যাপী বঙ্গবন্ধু বইমেলা

মেহেদি হাসান

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু  শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বঙ্গবন্ধু বইমেলা শুরু হয়েছে । সপ্তাহব্যাপী এ বইমেলার আয়োজন করেছে  জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের  সামনে বঙ্গবন্ধু মঞ্চ চত্বরে এ বইমেলার ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থেকে উদ্বোধন করেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম। 

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম বলেন, জাতির পিতা শুধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন তাই নয় আমাদের শিখিয়েছেন কিভাবে আমাদের  দেশকে এগিয়ে নিতে যেতে হবে। তার সাড়ে তিন বছরের কর্মকালীন সময়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে তিনি  দেশের উন্নয়ন জন্য কাজ করে  গেছেন। এমন কোন সেক্টর নাই যেখানে বঙ্গবন্ধু হস্তক্ষেপ করেন নাই। 

তিনি আরো বলেন আজকে  যেসব ছাত্র ছাত্রীরা বঙ্গবন্ধু বইমেলা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছেন, তারাই আগামী দিনে  দেশ পরিচালনা করবে ।  এ বই মেলার উদেশ্য তাদেরকে বঙ্গবন্ধুর  চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা।  যে  চেতনা দর্শনকে ধারন করে আমরা আগামী দিনে এগিয়ে যাবো। সে চেতনা ও দর্শন তাদের ভিতরে  প্রোথিত করা। এই উদ্যোগ আসলেই আমাদের গ্রহণ করা উচিৎ এবং সে ক্ষেত্রে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আজকের এই উদ্যোগ আমি মনে সময় উপযোগী। এটি গ্রহণ করা যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি। আমার পুরাতন কর্মস্থলে সুন্দর একটি আয়োজন করা হয়েছে। এ জন্য  জেলা প্রশাসকসহ যারা এই কর্মের সাথে সম্পৃপ্ত ছিলেন তাদেরকে সকলকে ধন্যবাদ সাধুবাদ জানাই। আগামীতে জাতির পিতা  কে সামনে  রেখে এ জাতীয় উন্নয়ন অনুষ্ঠান বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করবেন। 

জেলা প্রশাসক  মোঃ মঞ্জুরুল হাফিজের সভাপতিত্বে  রাজশাহী থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থেকে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ন কবীর, পিএসসির সাবেক সদস্য ফজলুল হক, নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শংকর কুমার কুণ্ডু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র মোঃ মোখলেসুর রহমান, অতিরক্তি পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খাঁন।  মেলায় জেলার লেখকদের ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে বরণ করে নেন আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মাযহারুল ইসলাম তরু।  

সমাপনী বক্তব্যে  জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিল  দেশ স্বাধীন করার জন্য, এই জাতিকে মুক্তি  দেয়ার জন্য, আমরা ১৯২০ সাল  কেন বিখ্যাত বলি তখন মনে হয় মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের  দেশে একজন মানুষের জন্য জন্ম দিয়েছিল, একটি মানচিত্রের জন্য, একটি জাতীয় সংগীতের জন্য।  যেখানে আমরা কারো অধীনে থাকবো না, এই বঙ্গবন্ধু নতুত্বের সৃষ্টি করেছিলেন, আমাদের মাঝে নতুন প্রাণ দিয়েছিলেন, নতুন সম্মান এনে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন আমাদেরকে মানুষ কম চিনে আমরা এই কর্নার  থেকে চেনাতে চাই, আমরা আছি। করোনা সময় আমরা চিনিয়ে ছিলাম, সারা পৃথিবীতে কোন ঔষধ  কে মডেল বলে নাই,  কোন উদ্যোগকেও মডেল বলা হয় নাই,চাঁপাইয়ের মানুষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল,  সেটি মডেল হয়েছে। এবং সারা বাংলাদেশকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কে ফলো করতে বলা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন  তোমদের জন্য বইমেলা করা হয়েছে । বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে, দুনিয়ার এত বই আছে বঙ্গবন্ধুর  নামে  কেন বইমেলা করা হয়েছে। শুধু বঙ্গবন্ধু বইমেলা নামে, একক বইমেলা আমার জানা মতে  দেশে  কোথাও বঙ্গবন্ধু নামে বই  মেলা করা হয়নি, এজন্যই বঙ্গবন্ধুর নামে বই  মেলা করা হয়েছে। 

১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে ১৬ হাজার ছাত্র ছাত্রীদের উপস্থিত হবে এবং লাল ও সবুজ ক্যাপের মাধ্যমে  জাতীয় পতাকা প্রদর্শন করা হবে।  জেলা প্রশাসন ২৭টি প্রকাশনা  বের করেছে বাংলাদেশের মধ্যে এটি সর্ববৃহৎ। বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১০০টি আমের নতুন করে নাম প্রকাশ করা হয়েছে। বই হচ্ছে সমাজের দর্পণ সাহিত্য হচ্ছে  সমাজের দর্পণ। এই বই মানুষকে জীবন দান করেন। মানুষকে প্রাণ দান করে। মানুষকে সৃষ্টিশীল করে তুলে, মাদকাসক্তি বাল্যবিবাহ এ ধরনের সমাজিক ব্যাধি  থেকে বই বাঁচাতে পারে ।

বই মেলা চলবে আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবারের বইমেলায়  জেলার ৫৫ জন স্থানীয়  লেখকের বই নিয়ে থাকছে স্টল। এছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাশাপাশি ঢাকা  থেকে প্রথমা, অনন্যা,  বেঙ্গল, ইউপিএল, বাঙালি, গ্রন্থ কুটিরসহ আরো  বেশ কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থার স্টল দিচ্ছে বলে জানা গেছে। বইমেলায়  মোট ৩০টি স্টল থাকছে।  মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা  থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে এবং সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। 

কপিরাইট © চাঁপাই নিউজ ডট কম ২০২৪ । সর্বসত্ব সংরক্ষিত।