মেহেদি হাসান
ভোলাহাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা নৈশ পরিবহন চাঁপাই ট্রাভেলস, সাথী এন্টারপ্রাইজ, জমজম ও ট্রাক, পিকআপ, মোটরসাইকেলসহ আরো কিছু পরিবহনের গতিরোধ করে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার রাতে ভোলাহাট-শিবগঞ্জ সড়কের সোনাজল নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৫ জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
ভোলাহাট এলাকার বাসিন্দা নৈশকোচের যাত্রী মো. সাবিরুল ইসলাম জানান, জরুরি কাজের জন্য ঢাকায় যাচ্ছিলাম। হঠাৎ গাড়িচালক সোনাজলে গাড়ি থামিয়ে দেয়। ভাবলাম হয়তো গাড়ির ইঞ্জিনে কোনো ত্রুটি হয়েছে। পরে দেখলাম বাইরে থেকে কিছু লোক গাড়ির হেলপারকে (গাড়ি চালকের সহযোগী) গেট খুলতে বলছে। হেলপার অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে সাথে সাথে ডাকাতরা লাঠি দিয়ে আঘাত করে। বাধ্য হয়ে গাড়ির দরজা খুলে দেয় ওই হেলপার। তিনি আরো জানান, এই রাস্তায় এ যাবৎকালে ডাকাতির বড় ঘটনা এটি। ১৫ থেকে ১৬ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে যাত্রীদের ওপর হামলা চালায়। গাড়িতে যাত্রীদের স্বর্ণের গয়না, মোবাইল, টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে ডাকাতদল।
গোমস্তাপুর এলাকার যাত্রী মোসা. সাহেলা নামের এক গৃহিণী জানান, আমার কাছে একটা নতুন অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ছিল। সেটি ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। গলায় একটা স্বর্ণের মালা ছিল, জোর করে গলা থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। এছাড়াও যারা চিৎকার করছিল তাদেরকে ডাকাতরা বেদম পিটিয়েছে বলে জানান তিনি।
বাস ছাড়াও কয়েকটি মোটরসাইকেলে ডাকাতি করা হয়েছে। মোটরসাইকেল আরোহীরা তাদের টাকাপয়সা না দিতে চাইলে ডাকতরা তাদের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এছাড়াও একটি মাইক্রোবাসে ভাঙচুর করা হয়েছে।
এদিকে ডাকাতের পিটুনিতে আহত আম বহনকারী ট্রাক ড্রাইভার মো. কাঞ্চন জানান, আম নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিলেন তিনি। রাস্তায় ডাকাতরা তাকে বেধড়ক পিটিয়ে নগদ ১০ হাজার টাকা ও ৩টি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। তার মাথায়, হাতে ও পিঠে ডাকাতরা বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে।
ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, সড়কে ডাকাতির ঘটনায় ৫ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতরা উপজেলার খালেআলমপুর গ্রামের সাথী এন্টারপ্রাইজের চালক মো. মানোয়ার, যাত্রী রাজিয়া, বীরেশ্বরপুরের ওবাইদুল, মো. রবিউল ও ট্রাক ড্রাইভার মো. কাঞ্চন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভোলাহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, বাস ডাকাতির খবর পেয়ে আমিসহ পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। ডাকাতরা দেশীয় অস্ত্র লাঠি ও ভোতা হাসুয়া নিয়ে ৩টি নৈশকোচে হামলা চালায়। এতে কয়েকজন সামান্য আহত হন। যাত্রী বেশি ছিল না। কয়েকজন যাত্রীকে মারধর করে কিছু টাকা ও সামান্য সোনার গয়না নিয়ে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সন্দেহভাজন ৫ জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।