মেহেদি হাসান
জেলা প্রশাসক মোঃ মঞ্জুরুল হাফিজ ও তার পরিবারবর্গ সরকারি শিশু পরিবার ও শিবগঞ্জ শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের এতিমদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন।
১৪ মে শুক্রবার ঈদের নামাজ শেষে তিনি ছুটে যান চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার স্বরূপনগর এলাকায় সরকারি শিশু পরিবার ও শিবগঞ্জ শেখ রাসেল শিশুকিশোর প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে। সেখানে শিশুদের সাথে নিয়ে তিনি ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন এবং তাদের সাথে নিয়ে মিষ্টি মুখ করান।
এসময় জেলা প্রশাসক মোঃ মঞ্জুরুল হাফিজের সাথে উপস্থিত ছিলেন তাঁর সহধর্মিনী সেলিনা হাফিজ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক ), জাকিউল ইসলাম, সহকারী কমিশনার চন্দন কর সহ জেলা প্রশাসকের পরিবারবর্গ।
এর আগে তিনি সরকারি শিশু পরিবার ও শিশু-কিশোরদের মাঝে নতুন পোশাক বিতরণ ও ইফতার করেছেন।
শুক্রবার ঈদের দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জেলা প্রশাসক এতিম শিশুদের নিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার বিষয়ে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন । যা পাঠকের সুবিধার্থে তুলে ধরা হলো।
ঈদ মানেই বাবা-মায়ের সান্নিধ্য, নিজ বাড়ি, প্রতিবেশী, আত্মীয় -স্বজন, বন্ধুদের সংগে গল্প, হাসি আরও অনেক কিছু। চাকুরি করি বলে বাধ্য হয়েই কর্মস্থলে থাকতে হল। কর্তব্যের খাতিরে মেনে নিলেও মনের মাঝে কিছুটা খুত -খুতানি ত রইলোই। তারপরও সকালে উঠে ঈদের নামাজ পড়েই রওনা হলাম শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র ও এতিম খানা উদ্দ্যেশ্যে। এতদিন বাবা-মার কাছে যেতাম ঈদ করতে ; আজ বাবা-মা হয়ে আমার স্ত্রীকে সংগে নিয়ে ওদের মাঝে গেলাম। একসাথে খেলাম, গল্প করলাম, ওদেরকে বড় হবার স্বপ্ন ও রাস্তা দেখালাম। ওদের চোখগুলো আমার কথা শুনে জ্বল জ্বল করে উঠল। হাজারো প্রশ্ন ওদের চেহারায়। এদের অনেকেই আছে যারা বাবা-মা কি জিনিস জানেনা। হয়ত কোন নারী-পুরুষের সাময়িক আবেগের ফসল হিসাবে দুনিয়াতে এসেছে কিন্তু স্বীকৃতি পায়নি।এমন ১৮টি শিশু পেলাম যাদের জন্মের পর প্রথম বিছানা হয়েছিল বাজারের পলিথিনে রাস্তার আবর্জনার মাঝে। রাষ্ট্র তাদের দায় ও দায়িত্ব উভয়ই নিয়েছে। বাবা বা মা বলে কাওকে ডাকার সুযোগ হয়ত তারা আদৌ পাবেনা।
ওদেরই বাবা-মা হয়ে আজ পৌছালাম, ওদের মুখে মিস্টি তুলে দিলাম, ওদের সাথে অনেক মজা করলাম। অল্পতেই ওরা কত খুশি। যখন বললাম আমরাই তোমাদের বাবা আমরাই তোমাদেরর মা ; তখন ওদের আনন্দ দেখে মনে হল এইত আমার ঈদ। এইতো আমার পরিবার। এইজন্যই তো আমার চাকরি, এই জন্যই তো আমার জন্ম।
এটাই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ ঈদ। যখন বললাম জেলা প্রশাসক তোমাদের বাবা জেলা প্রশাসকের স্ত্রী তোমাদের মা, ওদের মুখের হাসি দেখে মনে হল পৃথিবীর কোন হীরাই এর চেয়ে বেশী উজ্জ্বল হতে পারে না।
আমি সৌভাগ্যবান। মানুষের পাশে দাড়াবার এমন বীরল সুযোগ করে দেবার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাই।