মেহেদি হাসান
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের আলীনগর ভূত পুকুর গ্রামের ভিতর দিয়ে ফুঁড়ে চলা রাস্তা।রাস্তার ধার দিয়েই বাঁশের খুঁটি পুতে ঝোলানো হয়েছে বিদ্যুতের তার। তারের জটলার ভার সইতে না পেরে বাঁশগুলো হেলে পড়েছে। কোথাও বা হেলে থাকা বাঁশ ঠেকনা দেওয়া হয়েছে আরেকটি বাঁশ দিয়ে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের আলীনগর ভুত পুকুর গ্রামের দুই শতাধিক বাড়িতে এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে নেসকো পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি।
ময়না,নাসরিন,মুনতাজ আলী,নওশাদ আলী নামের কয়েক জন ভুক্তভোগী গ্রামবাসী বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এর ফলে জীবন নিয়ে ঝুঁকির মধ্যেই চলাচল ও বসবাস করতে হচ্ছে তাঁদের।সামনে আসছে বর্ষাকাল যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।আলীনগর ভূতপুকুর গ্রামের লোকজন স্টসার্কিটের আতঙ্কে নিয়ে বসবাস করছে দীর্ঘ দিন যাবৎ।
গ্রামবাসী জানান বিদ্যুৎ অফিসে বিদ্যুতের খুটির জন্য কয়েকবার আবেদন জানালেও কর্তৃপক্ষের নেই কোন উদ্যোগ।সর্বশেষ ফেব্রুয়ারী মাসে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ এর সুপারিশ নিয়ে আবেদন দিলেও নেই কোন দৃশ্যমান অগ্রতি। সরেজমিনে দেখা গেছে, এক কিলোমিটারের কিছু বেশি রাস্তাজুড়ে বসানো বাঁশের খুঁটিতে ভরসা করেই দুই শতাধিক বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুতের খুঁটির জন্য চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। কিন্তু খুঁটির ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হয়ে কর্তৃপক্ষ বাঁশ বসিয়ে সংযোগ দিয়েছে।
তরুণ উদ্যোক্তা সমাজ সেবী ও আসন্ন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর পদ প্রার্থী নাজনীন ফাতেমা জিনিয়া বলেন সামনে গ্রীর্ষকাল আসছে বিদ্যুৎ লাইনগুলো যে ভাবে বাঁশের উপর ভর করে টাঙ্গানো আছে ঝড়-বৃষ্টি হলে এলাকায় মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। বড় ধরনের দূর্ঘটনা হতে এ গ্রামবাসীকে রক্ষা করতে জরুরী ভিত্তিতে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, ১০০ গজের বেশি দূরত্বে সার্ভিস লাইন দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। ১০০ গজের অতিরিক্ত দূরত্ব হলে অবশ্যই খুঁটি দিতে হবে, অন্যথায় সংযোগ দেওয়া যাবে না। অথচ এ গ্রামে এক কিলোমিটারের বেশি দূরে গিয়ে খুঁটি বসানো হয়েছে। মাঝের স্থানগুলোতে বসানো হয়েছে বাঁশের খুঁটি। ময়না নামের নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, তাঁরা জানেন এভাবে বিদ্যুৎ নেওয়াটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ, তবু কিছু করার নেই। ঝুঁকি নিয়েই বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নেসকো চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মোঃ অলিউজ্জামান বলেন, সংযোগগুলো নানা সময় দেওয়া হয়েছে। গ্রামের মানুষের তদবিরে সংযোগগুলো দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। তবে ঝুঁকিমুক্ত করতে তাঁরা ওই স্থানে দ্রুত খুটি বসানোর পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান তিনি।