মেহেদি হাসান
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা শিক্ষা অফিসার সাইফুল মালেক, সহকারী পরিদর্শক ফজলে রাব্বি ও গবেষনা কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন প্রধান শিক্ষকের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কম্পিউটার প্রদর্শক হোসেন আলীর চাকুরিতে যোগদানের বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে দ্বন্দ নিরাসনে করে দেওয়ার নামে (সিনিয়র সহকারী জজ আদালত ) মামলা থাকার পরও ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক মিমাংসার দরখাস্তে স্বাক্ষর করিয়ে তার বিরুদ্ধে ভুল রির্পোট দিয়ে কম্পিউটার প্রদর্শককে হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী কম্পিউটার প্রদর্শক হোসেন আলী। সে অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল রাজশাহীর উপ-পরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলামকে পুনরায় তদন্ত করে আগামী সাত দিনের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল রাজশাহীর উপ-পরিচালক বরাবর দাখিল করতে বলা হয়েছে।
উপ-পরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী স্বাক্ষরিত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পত্রে বলা হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চামাগ্রাম হেনা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ভোকেশনাল শাখার কম্পিউটার প্রদর্শক পদে নিয়োগকালীন ২০১৪ সালে বর্তমান প্রধান শিক্ষকের শ্যালক মোঃ সাজেদুর রহমান অপু প্রার্থী ছিলেন কিন্তু নিয়োগ নির্বাচনী পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন। উক্ত নিয়োগ পরীক্ষায় মোঃ হোসেন আলী সব্বোর্চ নম্বর পেয়ে প্রথম নির্বাচিত হন এবং নিয়োগ প্রাপ্ত হন । বর্তমানে তিনি এমপিও হয়ে সরকারের সকল সুবিধা ভোগ করছে। কিন্তু বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ মোখলেসুর রহমান স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ কাওসার নাসিম মটনকে দিয়ে কমিটি গঠনে হোসেন আলীর নাম বাদ দেন, তালিকায় নাম বাদ পড়ায় প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি অবহিত করলেও তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছে, এমনকি তার নিয়োগে জাল সনদ মর্মে উপ-পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল রাজশাহী অভিযোগ দাখিল করেন, তদন্তপ্রেক্ষিতে জেলা শিক্ষা অফিসার চাঁপাইনবাবগঞ্জকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে পত্র প্রেরণ করেন। জেলা শিক্ষা অফিসার সাইফুল মালেক স্কুলে গিয়ে তদন্ত না করে হোসেন আলীকে জেলা শিক্ষা অফিসে ডেকে জেলা শিক্ষা অফিসার সাইফুল মালেক, সহকারী পরিদর্শক ফজলে রাব্বি ও গবেষনা কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন কম্পিউটার প্রদর্শক হোসেন আলীকে ম্যানেজিং কমিটি তার নাম অন্তভুক্ত করা হবে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক মীমাংসার দরখাস্তে স্বহস্তে লিখিয়ে স্বাক্ষর করান।
কম্পিউটার প্রদর্শক পদে নিয়োগ প্রদান করা তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মোঃ নাইমুল হক এ বিষয়ে জানান, ২০১৪ সালে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সঠিক নিয়ম অনুযায়ী প্রদর্শক পদে হোসেন আলীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সেই সময় তার কোন সনদ জাল পাওয়া যায়নি বিধায় তার এমপিও হয়েছে। সনদপত্র জাল বা নিবন্ধনের প্রয়োজন থাকলে তার এমপিও হতনা। কম্পিউটার প্রদর্শক নিয়োগের বিষয়ে বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান ও সভাপতি কাওসার নাসিম মটনের আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন।
ভুক্তভোগী কম্পিউটার প্রদর্শক হোসেন আলী জানান, বর্তমান প্রধান শিক্ষকের শ্যালককে আমার স্থলে নিয়োগ দিতে না পারায় প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষক হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে আমাকে অযৌক্তিকভাবে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। নিয়োগে আমার কোন সনদ জাল নেই, সব সনদে জন্মনিবন্ধন, ভোটার আইডি কার্ড সবকিছুর মিল রয়েছে। আমার বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল রাজশাহীর উপ-পরিচালক বরাবর দরখাস্ত দিলে তার তদন্ত করতে শিক্ষা অফিসার স্কুলে আসলেও সেখানে সঠিকভাবে তদন্ত না করে চাকুরি চলে যাওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাকে জেলা শিক্ষা অফিসে ডেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেন। কিন্তু পরে দেখি শিক্ষা অফিসার,সহকারী পরিদর্শক ও গবেষনা কর্মকর্তা আমার বিরুদ্ধে রির্পোট প্রদান করে। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের পিএফ দিলেও এসএসি ভোকেশনাল শাখার ১০ শিক্ষক কর্মচারীকে প্রায় ৩৪ মাসের পিএফ বন্ধ করে রাখলে জেলা শিক্ষা অফিসার বকেয়াসহ পিএফ ফান্ডের টাকা শিক্ষক-কর্মচারীকে দিতে বললেও এখন পর্যন্ত তিনি টাকা পরিশোধ করেনি।
চামাগ্রাম হেনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোখলেসুর রহমান জানান, আমি তার বিরুদ্ধে কিছু করেনি সে তার সেফটির জন্য সব জায়গা ঘুরে বেড়াচ্ছে। পিএফ ফান্ডের টাকার বিষয়ে তিনি জানান, ফান্ড শূন্য থাকায় তাদের টাকা পরিশোধ করা হয়নি।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার সাইফুল মালেক ও সহকারী পরিদর্শক ফজলে রাব্বি জানান, তার বিষয়ে তদন্ত তার বিদ্যালয়ে করা হয়েছে। তাকে কোন জোর বা ভয়ভীতি দেখানো হয়নি। তার আনীত অভিযোগ মিথ্যা।