মেহেদি হাসান
জমশেদ আলী
চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চলের একটি সীমান্তবর্তী জেলা। এ জেলার এক পাশে রাজশাহী ও অন্য পাশে নওগাঁ জেলা অবস্থিত। অপর দুই পাশে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। এ জেলার যে বিস্তৃত পর্যটন সম্ভাবনা রয়েছে তা সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক এ কে এম তাজকির-উজ-জামান বিভিন্ন ধরনের উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
মুজিব শতবর্ষ উদযাপনের জন্য জেলা প্রশাসনের সামনে কোর্ট চত্ত্বরে নৌকা দিয়ে তৈরী করেছিলেন মুজিব ম যা ছিল পর্যটকদের দৃষ্টি নন্দিত। তিনি উন্নত দেশের আদলে ফ্রেম তৈরী করে প্লাসটিকের বোতল সাজিয়ে বানানো হয়েছিল দুটো সেলফি স্ট্যান্ড,একটি কুঁড়ে ঘর আর একটি টাওয়ার। প্লাসটিকের তৈরী কুঁড়েঘর ও সেলফি স্ট্যান্ড দেখতে অনেক মানুষ সন্ধ্যার পর বেড়াতে আসতেন এবং সেলফি তুলে বন্ধুদের পোস্ট করে বোতলের তৈরী লাইটিং করা কুঁড়ে ঘরের ছবি শেয়ার করতেন। দর্শনার্থীরা বোতল দিয়ে কিভাবে ঘর বানানো যায় তা খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতেন এবং আনন্দ উপভোগ করেছেন। জেলা প্রশাসনের দোতলায় পড়ে থাকা ছাদটাকে কাজে লাগিয়ে ফলজ,বনজ, ঔষুধি সব মিলিয়ে প্রায় ৯০ প্রজাতির গাছ লাগিয়ে ট্রেনিং মাঝে ওপেন সেশন,নাগরিকদের সময় কাটানো আর ছোট-খাট কোন অনুষ্ঠান যাতে সবুজের মাঝে করা যায় তার উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এ জেলার অপর সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পকে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার কল্পে অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক এ কে এম তাজকির-উজ-জামান এজেলা কে পর্যটন শিল্প হিসেবে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কে “ম্যাংগো ট্যুরিজম” হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ম্যাংগো ট্যুরিজম বলতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের জেলা তা সকলে জানে। এ জেলার লোকজন জানান যে, এ জেলায় প্রায় ২৩০ প্রজাতির আম রয়েছে। এই আমের নামগুলোকে একত্রিত করে নতুনভাবে আমের এ্যালবাম তৈরি করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক এ কে এম তাজকির-উজ-জামান ।
বর্তমানে এ জেলার ক্ষিরসাপাত আম জিআই পণ্য। যা এই জেলাকে এবং আমের রাজধানী হিসেবে নামকরণকে যর্থাথতা দিয়েছে। প্রায় ৩১ হাজার হেক্টর জমিতে ৩ লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়। আম পাঁকার সময় আম পরিবহন, আম শ্রমিক, আম কুরিয়ার সার্ভিস করা, আম কিনতে আসা পর্যটকদের থাকা-খাওয়া মিলিয়ে ইত্যাদি চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমকেন্দ্রিক প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার একটা বাজার রয়েছে। এ কে এম তাজকির-উজ-জামান জানান এই জেলা পুরার্কীতির নিদর্শনে অনন্য অন্যতম সমৃদ্ধ একটি জেলা। অসংখ্য ইতিহাস সমৃদ্ধ স্থাপনা ও প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে; যেগুলো দেখে পর্যটকগণ আকৃষ্ট হবেন। এ জেলা বরেন্দ্র অ ল হিসেবে পরিচিত। বরেন্দ্র অ লের বৈশিষ্ট্যমন্ডিত উঁচু নিচু ভূ-প্রকৃতির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে। এ জেলার সমতলে বসবাসকারী ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। তাদের জীবন যাত্রার মান অন্যান্য অ লে বসবাসকারীদের আকৃষ্ট করতে বাধ্য। এই জেলায় তিনটি স্বাদু পানির নদীর অববাহিকা রয়েছে। যা এই জেলার এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। এই জেলার উল্লেখ্যযোগ্য দর্শনীয় স্থান গুলো হচ্ছে ছোট সোনামসজিদ, শাহনেয়ামতুল্লাহ এর মাজার, বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের সমাধি, দারসবাড়ি মসজিদ ইত্যাদি। এগুলো শুধু দর্শনীয় স্থানই নয় এর রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস। এ জেলার রয়েছে অনেক ঐতিহ্য। এ অঞ্চলের নকশী কাঁথা অন্যতম প্রসিদ্ধ। এ জেলার নকশী কাঁথা অন্য অ লের থেকে আলাদা। এখানে ঘুরতে এসে চাইলে নকশী কাঁথা কেনার সুযোগ উপভোগ করতে পারেন। এছাড়াও রয়েছে কাঁসা পিতলের ঐতিহ্য। মাসকলাইয়ের রুটি কিংবা আদি চমচম এর স্বাদ আকৃষ্ট করবে পর্যটকদের। এছাড়াও আরো রয়েছে সিল্ক। এই সিল্ক মূলত রাজশাহী সিল্ক নামে পরিচিতি হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে তার আদি নিবাস; উৎপাদিত হয় এখানে। পর্যটনের কোন স্থানের কথা বললে মনে হয় সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার, সুন্দরবন এর কথা। এছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার যে সকল পুরার্কীতি রয়েছে সেগুলোকে আকর্ষণীয় উপায়ে মানুষের নিকট উপস্থাপন করে দেশের মধ্যে এবং বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করে পর্যটনকে স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক এ কে এম তাজকির-উজ-জামান। জেলার এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে এ জেলার সকল তথ্যগুলোকে একত্রিত করে একটি পর্যটন ব্রশিয়ার তৈরি করেছেন তিনি । যার নাম দেয়া হয়েছে “চলো বেড়াই” বিদেশের মতো এই চলো বেড়াই ব্রশিয়ারটি বাস ষ্টেশন, রেল ষ্টেশনে সরবরাহ করার কথা উল্লেখ্য করেন তিনি। যা যে কেউ একাই পর্যটন এলাকা সহজেই খুঁজে পেতে পারবে। চলো বেড়াই ব্রশিয়ারটি মূলত আট পৃষ্ঠার নির্দেশিকা।
এর এক পাশে রয়েছে উপজেলা ভিত্তিক পর্যটন কেন্দ্রের তথ্যসমূহ। কোথায়, কিভাবে যাওয়া হবে, কার সাথে যোগাযোগ করবে ইত্যাদির বর্ণনা। পরবর্তী পৃষ্ঠার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী সুভ্যেনির রয়েছে তার বর্