চাঁপাইনবাবগঞ্জে ধানের বাজার মূল্য বেশি থাকায় কৃষকের মুখে হাসি

মেহেদি হাসান

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫ উপজেলায় ৫৩ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে এখন চলছে ধানকাটা ও মাড়াইয়ের মহাউৎসব। ভালো ফলন ও বাজারমূল্য বেশি থাকায় কৃষষরা রয়েছেন ফুরফুরে  মেজাজে।

 জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, জেলায় ৫৩ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের রোপা আমন ধান আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সদরে ৯ হাজার ৭৬০, শিবগঞ্জে ৩৯০, গোমস্তাপুর  ১৫ হাজার ৪৭০, নাচোলে ২৩ হাজার ১৬০ ও ভোলাহাট উপজেলায় ৪ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করেছেন কৃষকরা। এবার চাল উৎপাদরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৪১৬ মেট্রিক টন।  হেক্টরপ্রতি গড় ফলন হচ্ছে ৩ দশমিক ২৫  মেট্রিক টন।

নাচোলে রোপা আমন মৌসুমে ধান কাটার উৎসবে মেতে উঠেছেন কৃষক-কৃৃষাণিরা। এবারে ধানের ভালো দাম থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। সব দিকেই ধানকাটা ও মাড়াই কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

 খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্যবছর ধান কাটার মৌসুমে কৃষকরা প্রথম ধাপে ধানের মূল্য বেশি পেলেও ধীরে ধীরে দাম কমে অর্ধেকে এসে দাঁড়ায়। ফলে ধান চাষে সার ও শ্রমিকের সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ পরিশোধ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হতো কৃষকদের। এমন কি ঋণ কর্জ করে ধার পরিশোধ করতে হতো। কিন্তু এ বছর ধানের কাংখিত বাজারমূল্য বেশি থাকায় খুশিতে সময় পার করছেন কৃৃষকরা।

 নেজামপুর গ্রামের কৃষক রহিম জানান, ৫ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করেছি। বিঘাপ্রতি উৎপাদন খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। তিনি বলেন, এ বছর ধানের দাম থাকায় খরচ বাদে ভালো লাভ থাকবে। তার প্রতি বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন হচ্ছে ১৮ থেকে ১৯ মণ বলেও জানান তিনি।

ধান ব্যবসায়ী তরিকুল জানান, এখনো আমরা পুরোদমে ধান বেচাকেনা শুরু করিনি। তবে প্রতিমণ ধান ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকায় বেচাকেনা চলছে।

নাচোল উপজেলা কৃষি অফিসার বুলবুল আহমেদ জানান, এ বছর রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার ৪৬৫ হেক্টর। কিন্তুআবাদ হয়েছে ২৩ হাজার ১৬০ হেক্টর। বিভিন্ন জাতের ধানের মধ্যে রয়েছে স্বর্ণা, ব্রি ধান-৫১ ও ৫২, জিরাশাইল। এ বছর বিঘাপ্রতি ধানের ফলন হচ্ছে ১৮ থেকে ১৯ মণ। ফলে উপজেলায় মোট আবাদী জমিতে ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৩ লাখ ৩০০ মণ ধরা হয়েছে। এতে উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় রপ্তানি করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

কৃষি অফিসার আরো জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শে কৃৃষকরা একই জমিতে ধান চাষ করতে পেরে লাভবান হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের বেঁধে দেয়া মূল্যে রোপা আমন ধান সহজে কৃষকরা বেচাকেনা করতে পারেন সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

কপিরাইট © চাঁপাই নিউজ ডট কম ২০২৪ । সর্বসত্ব সংরক্ষিত।