সাংবাদিক সাজিদ তৌহিদের মোটরসাইকেল ছিনতাই

মেহেদি হাসান

নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক সাংবাদিককে হাত-পা বেঁধে জঙ্গলের মধ্যে ফেলে রেখে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে ৯টা ৪০ মিনিটের মধ্যে নিজ কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার পথে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-আমনুরা আঞ্চলিক সড়কের ডাকাতের বাথান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই সাংবাদিককে উদ্ধার করে। আব্দুল্লাহ আবু সাজিদ (সাজিদ তৌহিদ) (৪৪) চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক গৌড় বাংলায় বার্তা সম্পাদক হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি জেলার নাচোল পৌর এলাকার মমিনপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফের ছেলে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, সাংবাদিক সাজিদ তৌহিদ কাজ শেষে পত্রিকা অফিস থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেল যোগে তার বাড়ি নাচোল যাবার পথে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-আমনুরা আঞ্চলিক সড়কের ডাকাতের বাথান এলাকায় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। এসময় ছিনতাইকারীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। কিন্তু হেলমেট থাকায় তিনি আঘাত থেকে বেঁচে যান। তবে তিনি মোটরসাইকেল থেকে পড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যান। পরে তার হাত-পা বেঁধে পাশের একটি জঙ্গলে ফেলে রেখে লাল রঙয়ের টিভিএস মেট্রো প্লাস ১১০ সিসি মোটরসাইকেল, ২টি মোবাইল ফোন, মানি ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।

খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিককে উদ্ধার করে। ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে ওসি জানান।

এদিকে ছিনতাইয়ের শিকার সাংবাদিক সাজিদ তৌহিদ জানান, মুক্তিযোদ্ধা পিতা অসুস্থ থাকার কারণে কয়েকদিন যাবৎ নিজ বাড়ি নাচোল থেকেই অফিস করছি। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার রাতে পত্রিকার কাজ সেরে রাত ৯টার দিকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টা থেকে ৯ টা ৪০ মিনিটের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-আমনুরা আঞ্চলিক সড়কের ডাকাতের বাথান এলাকায় চিনতাইকারীদের কবলে পড়ি। প্রথমে পথ রোধ করে ধাক্কা দেয় এবং মাথায় জোরে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এতে মাথায় আঘাত না পেলেও গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যায়। ছিনতাইকারীরা ঘিরে ধরে পার্শ্ববর্তী একটি জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে আটকিয়ে রাখে। কোন শব্দ করলেই প্রাণে মেরে ফেলার হুমকী দেয় তারা। বাবার অসুস্থতার কথা বলে সবকিছু নিয়ে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করলেও তারা কোন কথায় কান না দিয়ে আমার নিজের গেঞ্জি খুলিয়ে নিয়ে পেছন হাতা করে হাত বেঁধে দেয়। এরপর চোখ বাঁধে এবং রেইনকোট ছিঁড়ে পা বেঁধে ফেলে দিয়ে আমার টিভিএস মেট্রোপ্লাস লাল রঙের ১১০ সিসি মোটরসাইকেল, ২টি মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ নিয়ে চলে যায় ছিনতাইকারীরা ।

এভাবে অনেকক্ষণ পড়ে থাকার পর কোন রকমে হাত ও পায়ের বাঁধন খুলে তারপর চোখ খুলে জঙ্গলের পাশের ধান ক্ষেতের মধ্যে হামাগুড়ি দিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি খামারে গিয়ে আশ্রয় নিই। সেখানকার পাহারাদারের সহযোগিতায় এঘটনা বাড়িতে এবং সহকর্মীদের মোবাইল ফোনে অবহিত করি। আমার অফিস ও সাংবাদিক নেতারা তাৎক্ষণিক পুলিশকে অবহিত করে বিষয়টি। খবর পেয়েই সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাফফর হোসেনসহ সদর থানা পুলিশ ডিবি পুলিশ, আমনুরা ফাঁড়ির পুলিশ ও সাংবাদিক বন্ধুরা আমাকে উদ্ধার করেন। পরে ঘটনাস্থল থেকে হেলমেট ও সেন্ডেল উদ্ধার করা হয়। আগামীকাল রবিবার সদর থানায় এজাহার দায়ের করা হবে বলে সাজিদ তৌহিদ জানান।

কপিরাইট © চাঁপাই নিউজ ডট কম ২০২৪ । সর্বসত্ব সংরক্ষিত।