মেহেদি হাসান
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান, দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান স্মরণে বৃহস্পতিবার এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের বাবুডাইং গ্রামে প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালা প্রাঙ্গণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের আয়োজনে শিক্ষার্থী, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ ও গ্রামবাসীরা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে সভায় অংশ নেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য কার্তিক কোল টুডুর সভাপতিত্বে সভায় লতিফুর রহমানের জীবনবৃত্তান্ত সম্পর্কে বর্ণনা দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী উজ্জামান নূর। এসময় অন্যান্যের মধ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক কানাই চন্দ্র দাস, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মাধব কোল সরেন ও মুক্তিযোদ্ধা মো. সুজারুদ্দিন।
শেষে বিদ্যালয়ে পড়া ইসলাম, সনাতন ও খ্রিস্টান ধর্মের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলাদাভাবে নিজ নিজ ধর্মীয় রীতিতে লতিফুর রহমানের জন্য প্রার্থন করা হয়। ইসলাম ধর্মের পক্ষে প্রার্থনা করেন মুক্তিযোদ্ধা সুজারুদ্দিন, সনাতন ধর্মের পক্ষে কানাই চন্দ্র দাস ও খ্রিস্টান ধর্মের পক্ষে বাবুডাইং গির্জার পাস্টর রাজেন সরেন।
বক্তারা বলেন, লতিফুর রহমান ছিলেন সৎ, নৈতিক মূল্যবোধ ও দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর অর্জিত আয় বাইরের দেশে নয়, এ দেশেই ব্যবহার করে অনেক বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন। নৈতিকতার প্রশ্নে তিনি ছিলেন অনঢ়। তাঁর স্বপ্ন ছিল, এমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যা ১০০ বছর পর্যন্ত চলে। প্রতিটি কর্মস্থানে তিনি যথাযোগ্য সৎ, উদ্যোমী, নৈতিক ও যোগ্য ব্যক্তিকে বসিয়েছেন। যারফলে এসব প্রতিষ্ঠানগুলো আজও উন্নতর হতে আছে। তিনি সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ছিলেন। তাঁর প্রতিষ্ঠান প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকায় তিনি সেই স্বাধীনতা দিয়েছেন। যাতে করে সমাজের আসল চিত্রটা ফুটে উঠে। আর এজন্য তাঁকে অনেকসময় নানা চাপের মুখেও থাকতে হয়েছে। তবুও তিনি দমে যাননি। নৈতিকতা ও সততার জন্য তিনি ২০১২ সালে ‘অসলো বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার। তিনি গত ৫০ বছরে একবারও পাকিস্তান যাননি। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এক কোটি এক লাখ টাকা দিয়েছিলেন। তিনি সব সময় বাংলাদেশের জয় দেখতে চাইতেন। দেশের এরকম লতিফুর রহমান আরও দরকার। তরুণ সমাজকে এমনভাবে গড়তে হবে যেন হাজার হাজার লতিফুর রহমানের সৃষ্টি হয়।