মেহেদি হাসান
মেহেদি হাসান
মোঃ আলমগীর হোসেন, বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৩০ তম ব্যাচের সদস্য, বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী আঘাত হেনেছে। বাংলাদেশ ও মুক্তি পায়নি এ ভাইরাস থেকে। মানুষ যখন এ ভাইরাস থেকে মুক্ত হতে ঘরে গৃহবন্দি। তখনও মুক্তি নেই সরকারি বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের। এই সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মানুষকে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস থেকে মুক্ত করতে নিরলসভাবে রাত দিন পরিশ্রম করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আলমগীর হোসেন। সাংবাদিক হিসেবে পেশাগত বিভিন্ন কাজে যখনই তাকে ফোন দিই, তখনই শুনি, হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে এখন সুন্দরপুর ইউনিয়নে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার চাল বিতরণে গুচ্ছ গ্রামে, কখনো বাজার মনিটরিং করতে পুরাতন বাজারে, ভ্রাম্যমান আদালত নিয়ে মাঠে ঘাটে বা কখনো অফিসে, না হয় মানুষকে সচেতন করতে রাস্তায় কিংবা সরকারি ত্রাণ কার্যক্রম তদারকি করতে ইউনিয়নে, তারপরও উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন কমিটির মিটিং, জেলা প্রশাসনের সাথে সম্বন্বয় করে বিভিন্ন মিটিং অংশগ্রহণ করেই যাচ্ছেন। ইউএনও মোঃ আলমগীর হোসেন করোনা ভাইরাস থেকে মানুষকে সচেতন করতে উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে লিফলেট আকারে একটি বিশেষ ঘোষণা বের করেছেন।
নির্দেশনায় তিনি উল্লেখ করেছেন বিদেশফেরত বা যারা ঢাকা-নারায়নগঞ্জ বা দেশের অন্যান্য জেলা থেকে এসেছেন সেসব ব্যক্তি ১৪ দিন অবশ্যই নিজ কক্ষ থেকে বের হতে পারবেন না। তাদের পরিবারের সদস্যরা তার থেকে আলাদা থাকবেন। তার থালা, বাটি, গ্লাস, কাপড়সহ অন্যান্য ব্যবহৃত জিনিসপত্র আলাদা করে রাখতে হবে এবং ওই পরিবারের সদস্যরা মসজিদসহ কোনো ধরনের লোক সমাগমে যেতে পারবে না। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপজেলায় সকল প্রকার গণজমায়েত, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সমাবেশ না করার নির্দেশনা। প্রয়োজন ছাড়া জনসাধারণকে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ এবং যত্রতত্র বাজার, মোড় বা দোকানে অযথা আড্ডা এবং যেকোনো ধরনের খেলাধুলা করা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। চায়ের স্টলসহ যেকোনো ধরনের দোকানে টিভি ও বসার বেঞ্চ সরিয়ে রাখা এবং দোকানের সামনে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ রাখতে হবে। উপজেলার সকল স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা। এ সকল নির্দেশনা না মানলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নির্দেশনায় জানানো হয়, কোনো ব্যক্তি এই নির্দেশ অমান্য করলে সংশিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, নিকটবর্তী পুলিশ কেন্দ্র ও স্বাস্থ্যকর্মীকে অবহিত করতে হবে এবং যেকোনো বিষয়ে সহযোগিতার জন্য উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ বসানো হয়েছে। এর আগেও তিনি দেশের যেকোন দুর্যোগের সময়ও উপজেলার মানুষকে ভাল রাখতে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আলমগীর হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, দেশের সেবায় মানব সেবাই কাজ করছি। আসুন আমরা নিজের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে ভালভাবে বেঁচে থাকার সুবিধার্থে সরকারি বিধি-নিষেধ মেনে চলে ঘরে অবস্থান করি।
লেখক বা সাংবাদিক হিসেবে বলতে পারি মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাজ মানব সেবা করা, জনগনের কল্যাণ সাধন করা। আর এ দুঃসময়ে তিনি যেন রক্তপাতহীন এক লড়াইয়ের ক্লান্তিহীন যোদ্ধা। এধারা অব্যাহত থাক এ প্রত্যাশাই রইল।