আজ শুক্রবার, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪

বদলির পরও স্বপদে বহাল বাফার গুদাম ইনচার্জ

মেহেদি হাসান

অপকর্মের বিস্তর অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাফার গুদামের ইনচার্জ মো. ফারুক হোসেনকে গত ১১ই মে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ এসএফসিএলে বদলি করা হয়। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের ডেপুটি চিফ অফ পার্সোনেল মো. মাসুদ পারভেজ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বদলি আদেশ জারি করা হয়। তবে বদলির দপ্তরাদেশ উপেক্ষা করে স্বপদে বহাল চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাফার গুদামের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। জারি করা ওই আদেশের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও নতুন কর্মস্থলে যাননি তিনি। তবে চট্টগ্রামের নর্থ পতেঙ্গা টিএসপিসিএল থেকে বদলি হয়ে আসা মোহাম্মদ মোবাশ্বির রায়হান তার নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। 

জানা গেছে, এ কর্মস্থলে বহাল থাকতে বদলি আদেশ জারি হওয়ার পর বিভিন্নভাবে তদবির শুরু করেছেন ফারুক হোসেন। বদলির দপ্তরাদেশ পাওয়ার পরও তিনি স্বপদেই রয়েছেন। গত বছরের ৯ই সেপ্টেম্বর বাফার গুদাম কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়। বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশন চাঁপাই নবাবগঞ্জ শাখার তৎকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ অভিযোগটি করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিসিআইসি’র কোম্পানি উপ-বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক)  মো. শামীম রানা অভিযোগ তদন্ত করেন। বিস্তর তদন্ত শেষে গত বছরের ১১ই নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাফার ইনচার্জ ফারুক হোসেন একজন অতীব কৌশলী মানুষ। তিনি সেবা প্রদানের পরিবর্তে আর্থিক সুবিধা আদায়ের প্রচেষ্টায় ব্যস্ত থাকেন সারাক্ষণ। অভিযুক্ত বাফার ইনচার্জ ফারুক হোসেনকে প্রত্যাহার করে সৎ এবং দক্ষ কর্মকর্তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাফার গুদামে পদায়ন করার সুপারিশ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. শামীম রানা। পরে চলতি বছরের ১১ই মে তাকে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ এসএফসিএল-এ বদলি করা হয়।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে চাঁপাই নবাবগঞ্জ বাফার গোডাউনে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্ত তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অভিযোগ রয়েছে ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তাকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বাগে রেখে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। একইভাবে দুর্নীতি ঢাকা রাখতেও ওই চক্রকে ম্যানেজ করে চলেছেন। চক্রটিকে ব্যবহার করে বদলি আদেশ উপেক্ষা করে তিনি স্বপদে বহাল রয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ইউনিটের সভাপতি মো. আকবর হোসেন বলেন, বাফার গুদাম ইনচার্জের বিরুদ্ধে বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ তদন্ত হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা বিসিআইসি’র কোম্পানি উপ-বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) মোহাম্মদ শামীম রানা বাফার গুদাম ইনচার্জ ফারুক হোসেনের বিভিন্ন অপকর্মের প্রমাণ পান। এবং তাকে বদলির জন্য সুপারিশ করেন। গত ১১ই মে ফারুক হোসেনকে বদলির আদেশ হয়। দু’মাস আগে বদলির অদেশ হলেও ফারুক হোসেন কেন নতুন কর্মস্থলে যাননি, সেটা আমাদের জানা নেই। তবে আমরা চাই অভিযুক্ত গুদাম ইনচার্জকে দ্রুত প্রত্যাহার করা হোক। বদলির আদেশ হওয়ার পরও নতুন কর্মস্থলে না গিয়ে কীভাবে আছেন জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাফার গুদাম  ইনচার্জ মো. ফারুক হোসেন বলেন, এটা আমার ম্যানেজমেন্ট জানে। আমার প্রতিষ্ঠান যদি যেতে বলে যাবো, থাকতে বললে থাকবো- আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আছে। বদলির আদেশ হয়েছে ঠিকই তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থাকতে বলেছেন। এজন্যই আছি। 

মন্তব্য সমুহ
০ টি মন্তব্য
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন
এই শ্রেনির আরো সংবাদ

ফিচার নিউজ