আজ শনিবার, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১, ২০শে এপ্রিল ২০২৪

আর্সেনিক আক্রান্ত বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের বেতবাড়িয়া গ্রামের অধিকাংশ মানুষ

মেহেদি হাসান

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার  বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন বেতবাড়িয়া এলাকায় টিউবওয়েল ও জল মটারের পানি পান করে  পুরো গ্রামের মানুষের শরীরে আর্সেনিক আক্রান্ত হয়েছে। এ গ্রামের ৫০-৬০ মানুষের হাতে পায়ে গুটি, সারা গায়ে কালো তিল দাগসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষ করে শরীরে কালো কালো দাগ, হাতে পায়ে ঘা দেখা দিয়েছে। 

এভাবেই আর্সেনিকমুক্ত বিশুদ্ধ পানির অভাবে অনেকটা নিরুপায় হয়ে জেনে শুনেই এ গ্রামের বেশিরভাগ মানুষকে প্রতিনিয়ত আর্সেনিক বিষপান করতে হচ্ছে। এখন গ্রামের দুই শতাধিক নারী-পুরুষ আর্সেনিক সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত এখানকার কোমলমতি শিক্ষার্থীরাসহ এক হাজার মানুষ আর্সেনিকের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশুদ্ধ পানি পান করতে না পারায় আর্সেনিকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ এই দীর্ঘ সময়ে মানুষকে সচেতন করতে বা আর্সেনিকমুক্ত পানির উৎস  তৈরি করতে সরকারি বা বেসরকারি কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বেতবাড়িয়া গ্রামের প্রায় অধিকাংশ বাড়িতে আর্সেনিক আক্রান্ত হয়েছে হয়েছে। কারো শরীরে কম কারো আবার বেশি দেখা দিয়েছে। এসব মানুষের কথা ভেবে শনিবার (১৬ জুলাই) সকালে সেখানে আক্রান্ত রোগীদেও সাথে দেখা করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তসিকুল ইসলাম তসি ও বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান  মোঃ আতাউল হক কমল, সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জন পলাশ হাসদা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা  পরিষদের চেয়ারম্যান তসিকুল ইসলাম তসি জানান, আমরা এ বেতবাড়িয়া গ্রামের অধিকাংশ মানুষের গায়ে আর্সেনিক আক্রান্তের খবর শুনে নিজে সরেজমিন পরিদর্শন করি এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের চিকিৎসকগণকে জানায়। সেই সাথে যারা এ আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়েছে তাদের খোঁজ খবর নিয়ে তাদের তালিকা করার নির্দেশ প্রদান করি এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে বেতবাড়িয়া এলাকায় দুটি বিশুদ্ধ পানি (ফিল্টারসহ) স্থাপনের জন্য বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। তিনি আরো জানান, শুধু মর্টার দিয়ে আ-ারগ্রাউ-ের পানি ব্যবহার না করে মহানন্দা নদী ও পদ্মা নদীর পানি নিয়ে বিশুদ্ধ করে জনগনের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা করার জন্য তিনি উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। এতে একদিকে যেমন আন্ডারগ্রাউন্ড এর পানির ব্যবহার কমবে তেমনি মানুষ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এর মাধ্যমে নদীর বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে পারবে। 

এ বিষয়ে সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জন পলাশ হাসদা জানান,  সদর উপজেলার বেতবাড়িয়া গ্রামের  বেশকিছু মানুষের মাঝে আর্সেনিকের নমুনা ব্যাপকভাবে পাওয়া গেছে। আমরা সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে প্রতিবছর  ২৬টি জলমন্টার দিয়ে থাকি যাতে মানুষরা বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারে। টিউবয়েল বা মর্টারের পানিতে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা হচ্ছে ০.০৫ মি.গ্রাম পার লিটার। এর  বেশি হলে এখানকার পানি খাওয়া বন্ধ করতে হবে।   কিন্তু এখানকার টিউবয়েল ও মর্টারের পানিতে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি আসের্নিক রয়েছে। সরকারি বা ব্যক্তিগত যেভাবেই হোকনা কেন এখানে  টেকনিক্যাল পারসনের মাধ্যমে টেস্ট করার পর এগুলো স্থাপন করতে হবে। 


মন্তব্য সমুহ
০ টি মন্তব্য
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন
এই শ্রেনির আরো সংবাদ

ফিচার নিউজ